ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার চাহিদা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বর্তমানে পৃথিবীতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময়য় স্কিলগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি স্কিল হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারের চাহিদা যেমন অন্য সব সেক্টরের চেয়ে অনেক ভাল তেমনিভাবে একজন ডিজিটাল মার্কেটারের হাতে থাকে অসংখ্য অপশন। আজকের এই লেখায় আমি বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরবো ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ বা বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এ আয় কেমন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কি? 

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কি? আমি জানি আপনি এখন বলবেন, এটা কোন প্রশ্ন হল?

হ্যাঁ। এটা আসলেই প্রশ্ন। এই প্রশ্ন লিখে অসংখ্য মানুষ বাংলাদেশ থেকে সার্চ করছে সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে। সম্ভবত এই মানুষগুলো হচ্ছে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কিছুই জানে না, তারা যখন শোনে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার, তখন তারা হয়ত এই কিওয়ার্ড লিখে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে। তারা আসলে বুঝতে চায় ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার সম্পর্কে। 

এই প্রশ্নের সিম্পল এন্সার হচ্ছে- অন্য সব সেক্টরের মতো ডিজিটাল মার্কেটিং একটা বিশাল বড় ইন্ডাস্ট্রি। এই ইন্ডাস্ট্রিতে লাখ লাখ মানুষ কাজ করছে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রফেশনাল হিসেবে অথবা এই কর্মযজ্ঞে কোন না কোন এরিয়াতে। আপনি যখন ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বা এই সেক্টরে কাজ করবেন তখন আপনার ক্যারিয়ারকে বলে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার।

এখন প্রশ্ন, ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কেমন? এই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজবো এই লেখায়।  

ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা কেমন? কেন ডিজিটাল মার্কেটিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেবেন? 

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে যারা ক্যারিয়ারের কথা ভাবছেন, তারা সম্ভবত এই সেকশনটাতে সবচেয়ে বেশি উৎসাহী হয়ে উঠবেন। কেন ডিজিটাল মার্কেটিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিবেন? বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কেমন? ডিজিটাল মার্কেটিং এর বর্তমান অবস্থা কেমন ইত্যাদি প্রশ্ন নিয়ে আপনাদের মধ্যে কৌতূহল। আমি নিচে কয়েকটা পয়েন্ট তুলে ধরছি। 

হাই ডিমান্ড

বর্তমান বিশ্বের সেরা ৫টি হাই ডিমান্ড স্কিলগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। দেশ এবং দেশের বাইরে একজন ডিজিটাল মার্কেটারের চাহিদা অনেক। ডিজিটাল মার্কেটিং একটা গ্রইং ইন্ডাস্ট্রি হওয়ার তুলনামূলকভাবে অন্য সব স্কিলের মতো এখানে দক্ষ মানুষ খুব একটা নেই। সারা পৃথিবী ডিজিটালাইজ হওয়ার প্রবণতার কারণে যে পরিমাণ ভাল মানের ডিজিটাল মার্কেটার দরকার সারা বিশ্বে, সেই তুলনায় পর্যাপ্ত ডিজিটাল মার্কেটার এখন পর্যন্ত তৈরি হয় নাই। 

আকর্ষণীয় ইনকাম এবং স্যালারি

ডিজিটাল মার্কেটিং খুবই আকর্ষণীয় একটি পেশা হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় এবং স্যালারি স্ট্রাকচার। অনেকের মধ্যে আগ্রহ, ডিজিটাল মার্কেটিং এ আয় কেমন বা ডিজিটাল মার্কেটিং এর সর্বোচ্চ বেতন কত ইত্যাদি। ডিজিটাল মার্কেটারদের ইনকাম একেক ক্ষেত্রে একেক রকম। অনেক কিছুর উপর এটা নির্ভর করে। 

যারা ফ্রিল্যাসিং মার্কেটপ্লেসগুলতে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে তারা সাধারণত প্রতি মাসে ৪০ হজারা টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিজিটাল মার্কেটিং ইনকাম করে থাকে। 

আর যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বাংলাদেশে চাকরি করে, তারা পজেশন অনুয়ায়ি সাধারণত ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১.৫ লাখ টাকা বেতনে চাকরি করে।  

ভার্সেটাইল অপশন

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনার হাতে অসংখ্য অপশন আছে। আপনি নিজের পছন্দ মতো কোন দিকে যাবেন সেখানে মুভ করতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল ডেভেলপ করে একজন মানুষ কি কি করতে পারে দেখুন- 

  • ফ্রিল্যান্সিংঃ আপনি একজন ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।
  • ফুল টাইম চাকরিঃ আপনি আপনার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে একজন প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারেন।
  • ব্লগিংঃ আপনি একজন ফুল টাইম ব্লগার হিসেবে প্যাসিভ ইনকাম সোর্স তৈরি করে, এই নিস সাইট মেকিং, গ্রইং অ্যান্ড ফ্লিপিং করে বেশ ভাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
  • উদ্যোক্তাঃ আপনি নিজে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে যে কোন আইডিয়া নিয়ে আপনার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করতে পারেন।
  • এজেন্সি ব্যবসাঃ আপনি একটা ডিজিটাল মার্কেটিং এসেন্সি শুরু করে, দেশ বিদেশের কাস্টমারদের সার্ভিস দিয়ে মানে মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারেন।  

ক্যারিয়ার গ্রুথের ভাল সুযোগ

আগের পয়েন্টেই উল্লেখ করেছি যে একজন ডিজিটাল মার্কেটার কি কি করতে পারে। সে চাইলে ফ্রিল্যাসিং, চাকরি, ব্লগিং, উদ্যোক্তা বা এজেন্সি ব্যবসা শুরু করতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এ ক্যারিয়ার গ্রোথ কেমন? এন্ট্রি লেভেল থেকে শুরু করে যত বেশি অভিজ্ঞতা হবে তত বেশি ইনকাম বা বেতন বাড়বে। মার্কেটপ্লেসগুলতে কাজ করতে করতে একটা সময় আপনি হয়ে উঠতে পারেন টপ রেটের ফ্রিল্যান্সার। আবার চাকরির ক্ষেত্রে এন্ট্রি লেভেল জব যেমন – জুনিয়র ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ থেকে একপর্যায়ে ম্যানেজার হওয়ার সুযোগ আছে।   

উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ

বেশিরভাগ ডিজিটাল মার্কেটারের ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত একটা বিষয় খুব কমন হয়। সেটা হচ্ছে- একজন ডিজিটাল মার্কেটার যখন অনেক বেশি অভিজ্ঞ হয়ে যায়, যখন অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে একটা ভাল অভিজ্ঞতা অর্জন হয়, তখন এক পর্যায়ে তারা নিজেরাও উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর কারণ খুব সিম্পল, তাদের হাত দিয়ে এতো এতো ব্যবসা সফল হচ্ছে, তাই এটাও তো স্বাভাবিক যে আমি নিজেই শুরু করছি না কেন? 

আর ডিজিটাল মার্কেটারদের উদ্যোক্তা জীবন বেশিরভাগ সময় সফল হয়, কারণ তারা ততদিনে একটা বিসনেসের আপস অ্যান্ড ডাউন সব কিছু জানে। তাই সঠিক সময়ে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেন না। 

ফ্ল্যাক্সিবল

ডিজিটাল মার্কেটিং একটা ফ্লাক্সিবল কাজ। কেননা, কাজটা যেহেতু সম্পূর্ণ অনলাইনে করতে হয় তাই, আপনি যে কোন স্থান থেকে, যে কোন সময় ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করতে পারেন। শুধু আপনার একটা ভাল ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি এবং একটা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলেই চলবে। 

অনেকের প্রশ্ন, আমি কি মোবাইল দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করতে পারবো কিনা? 

এই প্রশ্নের উত্তরে অনেক মানুষ আপনাদের মিস গাইড করবে। হ্যাঁ কিছু কিছু কাজ করা সম্ভব। কিন্তু সত্যি বলতে আপনার যদি কম্পিউটার না থাকে, মোবাইল দিয়ে আপনি এই কাজ করতে পারবেন না।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আপনি ভার্চুয়ালি সম্পূর্ণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করতে পারবেন। বাংলাদেশে বসে অ্যামেরিকার মার্কেটে ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনায়াসে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারবেন।  

সহজে শুরু করা যায় যে কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য বিশেষ কোন একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড লাগে না। এমন না যে আপনাকে ইঞ্জিনিয়ারিং বা মার্কেটিং ব্যাকগ্রাউন্ডের হতেই হবে। আপনি যে কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে যে কোন মুহূর্তে শুরু করতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার।

এমন কি যারা একেডেমিকভাবে খুব বেশিদুর পড়াশুনা করেন নাই, তারাও ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে অনায়াসে ফ্রিল্যাসিং মার্কেটপ্লেসগুল থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হতে হলে আপনাকে ইংলিশের বেসিক কমিউনিকেশন স্কিলটা থাকা জরুরী। 

তবে যারা ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কর্পোরেট জব করতে চান, তাদের মিনিমাম গ্রাজুয়েশনটা থাকা জরুরী।  

টেকনিক্যাল এবং ক্রিয়েটিভ এই ইন্ডাস্ট্রি

টেক স্যাভি মানুষের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং প্রচণ্ড থ্রিলিং একটি পেশা। আপনি যদি একজন ক্রিয়েটিভ মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ক্রিয়েটিভিটি ও টেক এই দুইটার কম্বিনেশনে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে তরতর করে ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাবেন। নিজের ক্রিয়েটিভিটি টেস্ট করার এর চেয়ে আর সুন্দর মাধ্যম কি হতে পারে? 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন? 

সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর বর্তমান যেমন ভাল তেমনি ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাটাও প্রবল। আপনি নিজেই একটু চারপাশে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন, সব কিছু কীভাবে রাতারাতি ডিজিটাল ও স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এই স্মার্ট পৃথিবীর জন্য মার্কেটিং মানেই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়বে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ডিম্যান্ড বাড়ছে

প্রতিনত বাড়ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা। সব ট্র্যাডিশনাল বিসনেস এখন একে একে ডিজিটাল হচ্ছে। আর ডিজিটাল বিসনেস মানেই ডিজিটাল মার্কেটিং। ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর চেয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এ সুবিধা অনেক  বেশি হওয়ার কারণেই বাড়ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ডিম্যান্ড।  

নতুন নতুন ডিজিটাল ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে

পৃথিবীতে নতুন নতুন্ন অনেক ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ব্যবসা বাণিজ্যের ধরণ পালটে যাচ্ছে। নতুন ডিজিটাল ক্ষেত্র তৈরি হওয়া মানে দরকার হচ্ছে নতুন নতুন কর্মদক্ষ মানুষের। 

আগামীর পৃথিবী ডাটা ড্রিভেন

স্মার্ট পৃথিবীর মার্কেটিং হবে ডাটা ড্রিভেন। ডাটা ড্রিভেন মার্কেটিং মানে আপনার মার্কেটিং এর সমস্ত সিদ্ধান্ত নিবেন ডাটার উপর ভিত্তি করে। ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধটা হচ্ছে আপনি ডাটা ড্রিভেন মার্কেটিং এপ্রোচে যাওয়ার ডিজিটাল মার্কেটিং এ খুবই কম। আর অন্যদিকে ডিজিটাল মার্কেটিং মানেই হচ্ছে ডাটা ড্রিভেন মার্কেটিং।  

অটোমেশন

পৃথিবী এখন অটোমেশনে ঝুঁকছে। অটোমেশন মানে হচ্ছে আপনি একটা সিস্টেম তৈরি করে আপনার কাজগুলোকে বিভিন্ন অটোমেশন টুলের মাধ্যমে সবকিছু একবার সেটআপ করে দিলে, এর পর আপনার ইন্সট্রাকশন অনুয়ায়ি আপনার বা কোন মানুষের সাহায্য ছাড়াও টুলের মাধ্যমে কাজগুলো হতে থাকবে। 

আর ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনি সবচেয়ে ভাল অটোমেশন করতে পারবেন। 

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্যারিয়ার

ডিজিটাল মার্কেটিং বাংলাদেশঃ বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার বর্তমানে অন্য সব ক্যারিয়ারের চেয়ে অনেক বেশি সম্ভাবনাময়য়। কারণ- বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং সেই অর্থে অনেক পরে শুরু হয়েছে। যারা ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এ অভ্যস্ত তারা খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং এ আসতে পারেনি। 

গত কয়েক বছর ধরে একটু একটু করে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচণ্ড জনপ্রিয় একটি পেশা হয়ে উঠছে ডিজিটাল মার্কেটিং। এর পেছনে অনেক অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে- প্রতিষ্ঠানগুলো এখন প্রায় সবাই ডিজিটাল মার্কেটিং এ একটু একটু করে আসতে শুরু করেছে। অন্য প্রতিষ্ঠান বা কোন ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি দিয়ে কাজ না করে তারা নিজেরাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য আলাদা আলাদা করে টিম তৈরি করে নিচ্ছে। ফলে একসাথে যে পরিমাণ ডিজিটাল মার্কেটারের চাহিদা কর্পোরেট সেক্টরে সেই পরিমাণে ভাল মানের ডিজিটাল মার্কেটার বাংলাদেশে নেই। 

আপনি হয়ত ভাবতে পারেন, এটা কোন কথা হল? ডিজিটাল মার্কেটার তো এখন বাংলাদেশের অলি গলিতেও পাওয়া যায়। হ্যাঁ এটা সত্যি- কারণ ডিজিটাল মার্কেটার এখন সবাই। যারা বিভিন্ন মানুষের ইউটিউব ভিডিওর নিচে গিয়ে স্প্যামি কমেন্ট করে বিভিন্ন কিছু প্রমোট করে বা ফেসবুক পোস্টের কমেন্ট সেকশনে গিয়ে প্রোডাক্ট নিয়ে কমান্ট করে আসে, তারাও নিজেদের ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে পরিচয় দেয়। যারা ফেসবুক পেইজে সামান্য বুস্ট বাটনে ক্লিক করে কোন পোস্ট বুস্ট করে তারাও নিজেদের ডিজিটাল মার্কেটার পরিচয় দেয়। 

কিন্তু সত্যি বলতে এরা কেউই ডিজিটাল মার্কেটার না। ডিজিটাল মার্কেটিং মানে এর চেয়ে অনেক বেশি কিছু। একজন ভাল ডিজিটাল মার্কেটারকে হতে হয় অনেক বেশি- 

  • ক্রিয়েটিভ 
  • এনালাইটিক 
  • টেক স্যাভি 
  • স্মার্ট 

তাকে সবার আগে বুঝতে হয় হিউম্যান সাইকোলজি। আর এই মানের ডিজিটাল মার্কেটারের বাংলাদেশে অনেক অভাব। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিড লেভেল বা টপ লেভেল পজেশনগুলোর জন্য যে ধরণের ডিজিটাল মার্কেটার দরকার, সেই মানের কেন্ডিডেট খুঁজে পায় না। তার মানে মার্কেটে চাহিদা প্রচুর সেই তুলনায় যোগান নাই। তার মানে বুঝতেই পারছেন আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটং এ নিজেকে বেশ দক্ষ একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে সুবর্ণ সুযোগ।

এছাড়া বাংলাদেশে যে হারে ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে একটু ভেবে দেখেন, এই ব্যবসাগুলোর জন্য কি পরিমাণ ডিজিটাল মার্কেটার দরকার। এমন কি যদি ডিজিটাল মার্কেটং স্কিল থাকে, আপনি নিজেই চাইলে অনলাইনে কোন একটা বিসনেস শুরু করে দিতে পারেন।

যেহেতু বর্তমানে সারা বিশ্বে ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির একটা বুম চলছে, তাই বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যাসিং মার্কেটপ্লসগুলো ডিজিটাল মার্কেটাররা খুবই ভাল করছে। আপনিই যদি একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হয়ে আপনার ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে চান, তাহলে নিঃসন্দেহে ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার এই স্বপ্ন পুরনে সবচেয়ে ভাল স্কিল।  

কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়বেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং যেহেতু একটা বিশাল বড় ইন্ডাস্ট্রি, তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এ কি ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে একটা প্রপার প্রস্তুতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। একটা ভাল সময়, শ্রম ইনভেস্ট করতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার পেছনে। পৃথিবীতে কোন কিছুই রাতারাতি হয় না, এটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে যা যা করতে পারেন- 

  • ডিজিটাল মার্কেটিং ফান্ডামেন্টাল শিখুন
  • মার্কেটিং ফান্ডামেন্টাল শিখুন
  • বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং হাতেকলমে শিখে প্র্যাকটিস করুন
  • নিজের পছন্দ মতো একটা টপিক বেছে নিয়ে সেটা নিয়ে এক্সপার্ট হওয়ার চেষ্টা করুন

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কীভাবে শুরু করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত পড়ুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং সেবার চাহিদা সবচেয়ে বেশি কিসের? 

ডিজিটাল মার্কেটং এর মধ্যে অনেকগুলো পার্ট আছে। যেমন- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টমাইজেশন (এসইও), পিপিসি, ইমেইল মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি। সবগুলোই বর্তমানে বেশ চাহিদা সম্পন্ন স্কিল। 

তবে আন্তর্জাতিক মার্কেট বিবেচনা করলে বিশেষ করে আপনি যদি ফ্রিল্যাসিং করতে চান, বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এ সবচেয়ে বেশি চাহিদা হচ্ছে এসইওর এবং গুগল অ্যাডসের। 

আর বাংলাদেশের কথা বিবেচনা করলে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ফেসবুক মার্কেটিং এবং গুগল অ্যাডসের।   

শেষকথাঃ 

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার চাহিদা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বলতে গেলে আসলে অনেক কিছু বলা যায়। আমি এই লেখায় চেষ্টা করেছি সম্পূর্ণ বিষয়টাকে যতটা সম্ভব সহজে তুলে ধরতে। আশাকরি একটা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন, ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার নিয়ে। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top