ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি ও কি কি? আপনি যদি এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানতে চান, তাহলে আজকের লেখাটা আপনার জন্যই। আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর কয়টি এই বিষয়টি জানতে চাওয়ার অর্থ আপনি ইতোমধ্যে জানেন ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন। তাই আমি আর সেদিকে যাচ্ছি না। 

আমার ডিজিটাল মার্কেটিং এর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি সাইফুল্লাহ সাইফ এই লেখায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর শাখা প্রশাখা নিয়ে একটা কমপ্লিট ধারণা দেবো। অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ, ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি নিয়ে জানবেন এই লেখায়।

তাহলে শুরু করা যাক। 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি এবং কি কি?

অনলাইনে কাস্টমারের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের টেকটিক ও টেকনোলজির সম্মিলন হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সংজ্ঞা এবং কার্জকারিতা একেকজনের কাছে একেক রকম। 

ডিজিটাল মার্কেটিংকে আমরা অনেকভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি। স্টাটেজি অনুয়ায়ি ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ একরকম আবার ডিজিটাল চ্যানেল অনুয়ায়ি ডিজিটাল মার্কেটিংকে অন্যভাবে ভাগ করা যায়। প্রোসেস অনুয়ায়িও ডিজিটাল মার্কেটিংকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়।

এবার বিস্তারিত ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টরগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক-

ইনবাউন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং বনাম আউটবাউন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং

ইনবাউন্ড মার্কেটিং এবং আউটবাউন্ড মার্কেটিং মার্কেটিং এর খুবই জনপ্রিয় দুইটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর। এখানে মার্কেটিংকে আমরা ডিরেকশন অনুয়ায়ি ভাগ করি। মানে দুইটা পক্ষ- প্রথম পক্ষ থেকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এবং দ্বিতীয় পক্ষ হচ্ছে যাদের জন্য এই প্রোডাক্ট বা সার্ভিস তারা। ডিরেকশন হচ্ছে- কাস্টমাররা নিজেরাই কি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস খুঁজে নিচ্ছে বা এর দিকে যাচ্ছে নাকি কাস্টমারদের সামনে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে আসা হচ্ছে? 

এবার বিস্তারিত দেখা যাক- 

১. ইনবাউন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং কি?  

ইনবাউন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর খুবই জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং মডেল, যেখানে কাস্টমার নিজে প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস খুঁজে নেয়, প্রতিষ্ঠানকে বিজ্ঞাপন দিয়ে দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হয় না। এখানে প্রতিষ্ঠান এমন সব কনটেন্ট তৈরি করে যা কাস্টমারকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী করে তোলে। 

এটাকে আমরা চুম্বকের সাথে তুলনা করতে পারি- ইনবাউন্ড মার্কেটিং এ প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস হচ্ছে চুম্বক, যা সবাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে টেনে নিয়ে যায়। এই কারণেই এটাকে ইনবাউন্ড মার্কেটিং বলে। 

ইনবাউন্ড মার্কেটিং এ সাধারণত টার্গেট কাস্টমারদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কিত পেইন পয়েন্ট বা সমস্যাগুল নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি রিসোর্সেস বা কনটেন্ট মাল্টিপল চ্যানেলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কাস্টমাররা যখন এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে তখন তাদের সামনে এই কনটেন্টগুলো চলে আসে এবং তারা এখান থেকে খুব ভাল সল্যুশন পায়। ফলে ধীরে ধীরে তারা এই প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। এবং এক সময় তারা কাস্টমারে পরিণত হয়ে। 

ইনবাউন্ড মার্কেটিং এ অডিয়েন্স হয় অনেক বেশি সুপার টার্গেটেড। কাস্টমার নিজেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের কাছে যায়।   

২. আউটবাউন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

আউটবাউন্ড মার্কেটিং সেই আগের পূরণো ধাচের মার্কেটিং প্রসেস যেখানে কাস্টমারের পেছনে পেছনে আঠার মতো লেগে থেকে তাদের সামনে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিং করা হয়। যতবার সম্ভব তার কাছে, যত উপায়ে সম্ভব তাকে এই ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে বারবার মনে করিয়ে দেওয়াই এই মার্কেটিং পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য। 

অডিয়েন্স যেখানে আছে আমি সেখানেই মার্কেটিং করবো। এখানে বেশ বড় অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যায়, তবে অনেক সময় যারা আমার কাস্টমার হওয়ার সম্ভাবনা নাই তাদের কাছেও মার্কেটিং করা হয়।

 ইনবাউন্ড নাকি আউটবাউট আমার ডিজিটাল মার্কেটিং কেমন হবে এটা নির্ভর করে আমি কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটং করবো তার উপর।  

অর্গানিক বনাম পেইড ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিংকে আমরা আরও দুইভাগে ভাগ করতে পারি- অর্গানিক এবং পেইড। আমি মার্কেটিং এ টাকা খরচ করবো কি করবো না, এর উপর ভিত্তি করেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই প্রকারভেদ। বিভিন্ন মেথডে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর অসুবিধা আছে। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনার জন্য কোনটা ঠিক।

১. অর্গানিক ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

পেইড অ্যাড রান না করে শুধু মাত্র ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার করে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে অর্গানিক ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। অর্গানিক ডিজিটাল মার্কেটিং এ মার্কেটিং চ্যানেলকে কোন টাকা পে করা হয় না। তার মানে হচ্ছে আমি ফ্রিতে যেখানে যেখানে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারি সবগুলোই হচ্ছে অর্গানিক ডিজিটাল মার্কেটিং। 

যেমন- আমার প্রতিষ্ঠানের একটা ফেসবুক ফেইজ বা গ্রুপ আছে, একটা ইউটিউব চ্যানেল আছে। আমি চাইলে কনটেন্ট তৈরি করে এই চ্যানেলগুলোতে পাবলিশ করে আমার অডিয়েন্সের কাছে ফ্রিতেই পৌঁছে যেতে পারি। 

আমি আমার ওয়েবসাইটে কনটেন্ট তৈরি করে এসইও করে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ফ্রিতে বেশ ভাল একটা ভিজিটর তৈরি করতে পারি। 

এগুলো হচ্ছে অর্গানিক ডিজিটাল মার্কেটিং এর কিছু উদাহরণ। 

২. পেইড ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

যখন আমার কনটেন্টকে অনেক বড় এবং টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমি কোন ডিজিটাল প্লাটফর্মকে টাকা পে করি, তখন তাকে বলে পেইড ডিজিটাল মার্কেটিং। মানে আপনি প্ল্যাটফর্মকে টাকা দিয়ে আপনার কনটেন্টকে অডিয়েন্সের কাছে পউছাচ্ছেন। যত বেশি টাকা দিবেন, তত বেশি মানুষের কাছে পউছাবেন, যত দিন টাকা দিবেন তত দিন আপনার কনটেন্ট মানুষের কাছে পৌঁছাতে থাকবে।

প্রতিটা ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলেরই অ্যাড প্লাটফর্ম আছে- যেমন- গুগলে অ্যাড দিতে চাইলে গুগল অ্যাডস, ফেসবুকে অ্যাড দিতে চাইলে ফেবসুক অ্যাড ম্যানেজার, লিঙ্কেডিনে লিঙ্কেডিন অ্যাডস। এই প্লাটফর্মগুলোর মাধ্যমেই পেইড অ্যাডভার্টাইজ করতে হয়। 

চ্যানেল অনুয়ায়ি ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার? ৮টি সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল

যে যে ডিজিটাল মাধ্যমগুলোতে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং করি সেগুলোকে বলে ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল। যেমন আমরা যদি ফেসবুকের মাধ্যমে মার্কেটিং করি তাহলে ফেসবুক একটি ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল, যদি ইউটিউবের মাধ্যমে মার্কেটং করি তাহলে ইউটিউব হচ্ছে আরেকটা ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল। 

চ্যানেল অনুয়ায়ি ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি ৬ টি-  

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন এডভার্টাইজিং বা পিপিসি
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  • কনটেন্ট মার্কেটিং
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং
  • ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

১. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM) কি?

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে যখন কোন প্রতিষ্ঠান তার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিং করে তখন তাকে বলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing) কে সংক্ষেপে বলে এসএমএম (SMM)। 

যেমন- ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কেডিন, টিকটক স্নেপচ্যাট ইত্যাদি মাধ্যমে মার্কেটিং করাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে। 

২. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) কি? 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা এসইএম নিয়ে জানতে হলে আগে জানা দরকার সার্চ ইঞ্জিন কি? সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক এমন একটি টুল বা সফটওয়্যার যার মাধ্যমে আমরা ওয়ার্ল্ড অয়াইড ওয়েবে (WWW) বা ইন্টারনেট থেকে কোন তথ্য খুঁজে পাই। 

উদাহরণ গুগল, বিং ইত্যাদি। 

আমরা প্রতিদিন অনেক অজানা তথ্য খোঁজার জন্য গুগল ব্যবহার করে থাকি। এই গুগল হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন। 

সার্চ ইঞ্জিনে আমাদের মতো কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ে জানার জন্য খোঁজার জন্য সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন বিষয় লিখে সার্চ করে। আমরা সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ বক্সে যে প্রশ্ন করি তাকে বলে কিওয়ার্ড।

সার্চ ইঞ্জিন কোন কিওয়ার্ডের জন্য সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের রিলেভেন্ট পেইজকে নিয়ে আসে। 

প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে জানার জন্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করছে। সার্চ ইঞ্জিন যেকোন প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং করার জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম। কোন প্রতিষ্ঠান যখন ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে, তখন তাকে বলে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংকে (Search Engine Marketing) সংক্ষেপে বলে SEM.

যেমন- আপনি যদি গুগল বা বিংকে টার্গেট করে মার্কেটিং করেন, তাহলে সেটা হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং আবার দুই ধরণের হয়- 

  • সার্চ ইঞ্জিন এডভার্টাইজিং
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
সার্চ ইঞ্জিন এডভার্টাইজিং(SEA) কি?

আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিনকে টাকা পে করে নির্দিষ্ট কোন কিওয়ার্ডের জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে টার্গেট মানুষের কাছে নিয়ে আসেন তাহলে তাকে বলে সার্চ ইঞ্জিন এডভার্টাইজিং বা এসইএ। এটা একটি পেইড মার্কেটিং মেথড। 

উদাহরণ- কোন কিছু লিখে সার্চ করলে আমরা মাঝে মাঝেই সার্চ ইঞ্জিনে কিছু রেজাল্ট দেখে যার উপরে অ্যাড লেখা থাকে। এগুলোকে বলে গুগল সার্চ অ্যাড।  

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) কি?

কোন ওয়েবসাইটের কোন পেইজকে নির্দিষ্ট কিছু কিওয়ার্ডের জন্য সার্চ ইঞ্জিনের টপে সম্পূর্ণ ফ্রিতে নিয়ে আসার জন্য যে যে কাজগুলো করতে হয় তাকে বলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও। এসইও হচ্ছে অর্গানিক মার্কেটিং মেথড।

যে পেইজটা সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিওয়ার্ডের জন্য সবচেয়ে উপরে থাকবে সেটাই সেই কিওয়ার্ডের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভিজিটর পাবে।   

আমরা প্রতদিন বিভিন্ন প্রোডাক্ট, সার্ভিস সম্পর্কিত বা এমন অনেক সমস্যা আছে যার সমাধান কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মাধ্যমে পাওয়া যায়, এই ধরণের অসংখ্য কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করি সেই  বিষয়ে জানার জন্য। 

এই কিওয়ার্ডগুলোকে টার্গেট করে যদি আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট তৈরি করে সার্চ ইঞ্জিন অপটমাইজেশন বা এসইও করি তাহলে খুব সহজেই আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ ফ্রিতে লাখ লাখ ভিজিটর নিয়ে আসতে পারি।  

৩. কনটেন্ট মার্কেটিং কি?

কনটেন্ট মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম প্রধান একটি মার্কেটিং মডেল যা লং টাইম বিসনেস মার্কেটিং স্ট্রাটেজি নিয়ে কাজ করে এবং যার উদ্দেশ্য হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে প্রচুর পরিমাণে হাই কোয়ালিটি, রিলেভেন্ট কন্টেন্টটের মাধ্যমে টার্গেট অডিয়েন্সকে এডুকেইট করে, এওয়ার করে তাদের সাথে একটা স্ট্রং রিলেশনশিপ তৈরি করা এবং ইনডিরেক্টলি প্রোডাক্ট সেল করা। 

আমার টার্গেট অডিয়েন্সের এই প্রোডাক্ট সম্পর্কিত পেইন পয়েন্টগুলো নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি কনটেন্ট সবগুলো ডিজিটাল মিডিয়াজুরে ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে তারা এই ধরণের সমস্যাগুলোর সবচেয়ে বেশি সমাধান পেতে পারে আমার প্লাটফর্মের কনটেন্টগুলোর মাধ্যমে। এর ফলে ফ্রিতে যেমন আমার খুব ভাল একটা ব্রান্ডিং হয়ে যাচ্ছে, একই সাথে আমার প্রতিষ্ঠানের কনটেন্টগুলো অনলাইনে বেশি বেশি পাওয়ার অর্থ আমাকে অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি ট্রাস্ট করবে। 

ফলে ওরাই একসময় আমার সবচেয়ে ভাল কাস্টমারে পরিণত হবে।   

৪. ইমেইল মার্কেটিং কি?

ইমেইল মার্কেটিংয়ের অন্যতম একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ইমেইলের মাধ্যমে প্রতি মাসে একটা বেশ ভাল পরিমাণ রেভিনিউ রেজারেট করতে পারে। 

কোন প্রতিষ্ঠান যখন তার ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে ইমেইলকে বেছে নেয় বা ইমেইলে অনেক বেশি ফোকাস করে তার প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করে তখন তাকে বলে ইমেইল মার্কেটিং। 

৫. অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং কি?

যখন আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবাকে আপনার ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে প্রোমোট করে সেল করে দিয়ে সেই প্রোডাক্টের বিক্রিত মূল্য থেকে একটা নির্দিষ্ট হারে কমিশন লাভ করার প্রসেসকে বলে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং। 

মনে করুন আমি স্যামসাংয়ের কোন একটা মডেলের টিভি আমার কোন ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিক্রি করে দিয়ে প্রতি প্রোডাক্ট থেকে ১০% করে কমিশন পাচ্ছি। তাহলে প্রতিটা টিভির দাম ধরলাম ৪০,০০০ টাকা, তাহলে একটা টিভি বিক্রি করেই আমি কমিশন হিসেবে পেয়ে যাবো ৪০০০ টাকা। আমি যদি মাসে ১০ টা টিভি বিক্রি করে দিতে পারি তাহলে কমিশন থেকে ইনকাম হবে ৪০০০০ টাকা। 

অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং আপনি যেকোন ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে করতে পারেন। যেমন- সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওয়েবসাইট ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রসেস হচ্ছে নিজে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে, সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিক্রি করে অ্যাফেলিয়েট কমিশন লাভ করা। 

এই প্রজেক্টগুলোকে বলে নিস সাইট প্রজেক্ট। একটা নিস সাইট থেকে মোটামুটি ৬ মাস পর প্রতি মাসে ৫০০ ডলার থেকে ১০০০ ডলার ইনকাম করা সম্ভব। তবে তার জন্য আপনাকে খুব ভাল এসইও জানতে হবে। 

একটা ওয়েবসাইট প্রতি মাসে এভারেজে যে ইনকাম করে তার চেয়ে অন্তত ৩০-৪০ গুন দামে ওয়েবসাইটটি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করা যায়। ১০০০ ডলার ইনকাম করা একটা ওয়েবসাইট আপনি অন্তত ৩০০০০ ডলারে বিক্রি করে এককালীন একটা ভাল প্রফিট জেনারেট করতে পারেন। 

অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটং এর খুবই জনপ্রিয় একটি ক্যারিয়ার। 

৬. ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কি?

প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসের মার্কেটিং করার জন্য আরেকটা খুবই জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।

বর্তমান সময়ে কিছু মানুষ ডিজিটাল চ্যানেলগুলো প্রচণ্ড জনপ্রিয়। তাদের মিলিয়ন মিলিয়ন ফ্যান ফলোয়ার। অর্থাৎ লাখ লাখ মানুষ ওদেরকে ফলো করে। এদেরকে বলে ইনফ্লুয়েন্সার। 

আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখি, মাঝে মাঝে ইনফ্লুয়েন্সাররা তাদের কোন একটা কনটেন্টে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের কথা ডিরেক্ট বা ইনডিরেক্ট বলছে। এটাই ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং। 

তার মানে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কি? 

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং হচ্ছে যখন কোন প্রতিষ্ঠান তার পণ্য বা সেবাকে খুবই জনপ্রিয় একজন মানুষকে দিয়ে প্রমোট করায় তখন তাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বলে। 

প্রতিটা জনপ্রিয় মানুষের ইমেজ একেক রকম এবং তাদের ফ্যান ফলোয়ারদের ধরণও ভিন্ন ভিন্ন। আমি যখন আমার প্রোডাক্টের জন্য ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করবো, আমাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আমি এমন কাউকে সিলেক্ট করবো যার ফলোয়ার, আমার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের টার্গেট অডিয়েন্সের সাথে ম্যাচ করে।

  ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখবেন? এই লেখাটি পড়ুন।

শেষকথা

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর বা ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপ সমূহ নিয়ে বেশ বড়সড় একটা লেখা লিখে ফেললাম। আমি এই লেখায় ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার বা ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি এবং কি কি ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। আশা করি লেখাটি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনাদের হেল্প করবে। আপনি যদি এক ব্লগে কমপ্লিট কমপ্লিট ডিজিটাল মার্কেটিং জানতে চান, তাহলে এই লেখাটি পড়ুন

সবাই ভাল থাকুন। নিয়মিত আমার ব্লগ পড়ুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top